•• ••

আইসিটি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা (ICT Dependent Production)

Posted on Sep 21, 2022 by Ikbal Ahmed
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

ব্যবহারকারী বা ভোক্তাদের ব্যবহার্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও পরিসেবা তৈরি বা সরবরাহের পদ্ধতিকে বলে উৎপাদন। এই প্রক্রিয়া সৃজনশীলতা, গবেষণা, জ্ঞান, মেধা ও মনন ইত্যাদির সমন্বিত ব্যবহার বা কর্মের দ্বারা দৃশ্যমান হয়।

একদিকে মানুষের প্রয়াজেন ও পছন্দের বৈচিত্রা অন্যদিকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষকে নতুন নতুন পণ্যের প্রতি প্রলুদ্ধ করার কারণে মানুষের নানা রকম চাহিদার সৃষ্টি হয়। সেই চাহিদা মিটাতে প্রতিনিয়ত পণ্যের নতুন নতুন মডেল বাজারে আসছে। চাহিদা মোতাবেক পণ্যের বৈচিত্র্য ও গুণগতমান নির্ধারণের জন্য পরিকল্পনা, পরিবহন, বিপণন, নকশা, উন্নয়ন ইত্যাদির জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতে হয়। উৎপাদন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে Program Logic Controller (PLC) ব্যবহার করার ফলে উৎপাদশীলতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজকাল হাতের স্পর্শ ছাড়াই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে কলকারখানায় পণ্য উৎপাদন চলছে। যার দরুণ সময়ের অপচয় রোধসহ কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কমে গেছে। তাছাড়া, আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের যন্ত্র, পণ্যদ্রব্য ডিজাইনিং, ড্রাফটিং, সিম্যুলেশন করার জন্য বিশেষায়িত সফটওয়্যার, যেমন- Computer Aided Design (CAD) ইত্যাদির মাধ্যমে নিখুঁতভাবে নকশা প্রণয়ন করা হয়। জটিল ফর্ম কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের সাহায্যে নিখুঁতভাবে কাটা যায়। বিভিন্ন রাসায়নিক কারখানা কিংবা ওষুধ শিল্পে কম্পিউটারের সাহায্যে কাঁচামালের পরিমাণ, কিংবা চাপ ও তাপ নিখুঁতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। উৎপাদন ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত কর্মীবাহিনীর যাবতীয় তথ্যাদি যেমন-দক্ষতা, শ্রমঘণ্টা, পারিশ্রমিকসহ ব্যক্তিগত তথ্যাদি এবং পণ্য সংক্রান্ত সার্বিক তথ্য নির্ধারিত সফটওয়্যারে সংরক্ষণ করে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়। একটি কারখানাকে পরিপূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় করে সেটিকে চব্বিশ ঘন্টা কর্মক্ষম রাখা সম্ভব। কৃষিক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শস্য উৎপাদন, মৎস্য চাষ, প্রাণিসম্পদ, বনজ সম্পদ, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন- 

পর্যবেক্ষণ-রক্ষণাবেক্ষণ কাজে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া কাজ করে যাচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও তৃণমূল পর্যায়ে কৃষক ও প্রান্তিক চাষীগণকে খুব সহজ, সরল ও আকর্ষণীয়ভাবে কৃষি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় অবহিতকরণ ও তথ্য সরবরাহের দ্বারা কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। ঋতুভিত্তিক চাষাবাদ, বীজের ধরন, মাটির গুণাগুণ পরীক্ষণ, সার প্রয়োগের পরিমাপ, রোগ-বালাই প্রতিরোধ, কৃষিপণ্যের বাজারমূল্য ইত্যাদি সম্পর্কে সবধরনের তথ্য এর মাধ্যমে জানতে পারা যায়। তাছাড়া কৃষি গবেষণাগারে জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আবহাওয়া ও পরিবেশ উপযাগেী নতুন নতুন খাদ্যশস্য ব্যাপক হারে উৎপাদনের বিষয়ের তাত্ত্বিক কার্যক্রম কিন্তু আইসিটির ব্যবহারেই সম্ভব হচ্ছে। আমাদের দেশে কৃষি তথ্য সার্ভিস সংক্রান্ত সরকারি এবং বেসরকারি ওয়েবসাইট এর মাধ্যমেও কৃষি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যসেবা পাওয়া যাবে।

সুগার মিলগুলোেেত ই-পুর্জি চালু হওয়ার সুবাদে কৃষকগণ মোবাইল ফোন কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে তাঁর আখ সরবরাহের তথ্যাদি দ্রুত পেতে পারেন। অন্যদিকে, প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির নানাভাবে প্রয়াগে ঘটছে। যার মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ সহজে শনাক্তকরণ, মালিকের নাম, লিঙ্গ, জন্ম তারিখ ইত্যাদি তথ্য সহজেই বের করা সম্ভব হচ্ছে।