স্মার্টফোন দ্রুত চার্জ করার উপায়
সবার হাতে হাতে এখন নিত্য নতুন স্মার্টফোন। সময়ের সাথে সাথে মানুষ আরও বেশি ফোন নির্ভর হয়ে পড়ছে। কিন্তু সাধের এই প্রিয় ফোনের অনেক সময় চার্জ শেষ হয়ে যায়। আবার ফোন ধীরে চার্জ হলে অনেকেই বিরক্ত হন।
আবার অনেকের ফোন দিনে দুই বার চার্জ দেওয়া দরকার হয়। তবুও কাজের মাঝে ফোন চার্জে লাগিয়ে রাখার অভিজ্ঞতা সুখকর হয় না। কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করলে অনেক দ্রুত অ্যানড্রয়েড ফোন চার্জ করা যায়।
এয়ারপ্লেন মোড
আপনার ব্যাটারির চার্জ কমার বড় একটি কারণ হলো নেটওয়ার্ক সিগন্যাল। সিগন্যাল যত খারাপ হবে, আপনার ব্যাটারির চার্জ তত দ্রুত শেষ হবে। ফোন চার্জ করার সময় দুর্বল সিগন্যালে ব্যাটারির শক্তি অপচয় হয়। এর সমাধান হলো, চার্জে প্লাগ ইন করার আগে আপনার ফোনটিকে এয়ারপ্লেন মোডে রাখা। পরীক্ষায় দেখা যায় যে এটি সম্পূর্ণ চার্জের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের পরিমাণ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে৷
আপনার ফোনটিকে এয়ারপ্লেন মোডে নিতে, নোটিফিকেশন বার নিচের দিকে সোয়াইপ করুন এবং এয়ারপ্লেন মোড আইকনে ট্যাপ করুন। অথবা, সেটিংস > নেটওয়ার্ক অ্যান্ড ইন্টারনেট > এয়ারপ্লেন মোডে গিয়েও এটি সেট করতে পারেন।
ফোন বন্ধ রাখুন
সহজ, স্পষ্ট একটি উপায় কিন্তু প্রায়ই এটিকে উপেক্ষা করা হয়। সহজ কথায় আপনার ফোনটি চার্জ করার সময় বন্ধ থাকলে, অনেক দ্রুত ব্যাটারি চার্জ হবে৷ এক্ষেত্রে চার্জিংয়ের সময় ব্যাটারি থেকে কোনো চার্জ ক্ষয় হবে না। তবে অবশ্যই, চার্জ করার সময় ফোন বন্ধ রাখার কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। তবে আপনি যদি বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে ফোনটিকে দ্রুত ১৫-মিনিটের একটি বুস্ট দিতে চান তবে সেক্ষেত্রে এটিকে বন্ধ করা অবশ্যই একটি ভালো উপায়।
চার্জ করার সময় ফোন ব্যবহার না করুন
চার্জ করার সময় ফোন ব্যবহার করবেন ন। এ সময় ফোন ব্যবহার করলে তা চার্জিংয়ের গতি ধীর করে দেয়৷ বিশেষ করে, গেমের মতো ভারী অ্যাপ ব্যবহার করলে ফোন গরম হয়ে উঠবে, চার্জিং প্রক্রিয়া ধীর হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে ব্যাটারির ক্ষতি করবে।
ফোন দীর্ঘ সময় গরম হয়ে থাকলে এর ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে। এ কারণে ফোন চার্জারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় গেম খেলা, ভিডিও বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা অ্যাপ এবং ফিচার বন্ধ রাখুন
ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিং অ্যাপ ব্যবহার না করলেও ডিভাইসের ব্যাটারি ব্যবহার করে। সরাসরি ব্যবহার করা হচ্ছে না এমন অ্যাপের মাধ্যমেও একটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি সাধারণত ধীরগতিতে চার্জ হতে পারে। তাই এই ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিং অ্যাপ্লিকেশানগুলি বন্ধ করে চার্জিংয়ের গতিকে বাড়িয়ে তুলতে পারেন। অ্যাপ সেটিংসে গিয়ে আপনি চাইলে এগুলো বন্ধ করে নিতে পারেন।
এছাড়া লোকেশন, ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথের মতো ব্যাটারি খরচকারী ফিচারগুলো বন্ধ করুন৷ ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ব্যাটারি খরচ করে। চার্জিংয়ের সময় এগুলো বন্ধ রাখলে ডিভাইস চার্জিংয়ে গতি বাড়বে।
ওয়াল সকেট ব্যবহার করুন
কম্পিউটার কিংবা গাড়িতে ইউএসবি পোর্ট ব্যবহার করে চার্জ করলে চার্জিংয়ের কর্মদক্ষতা অনেক কম এবং গতি ধীর হয়।
সাধারণত, নন-ওয়াল সকেট ইউএসবি পোর্টগুলো মাত্র ০ দশমিক ৫ অ্যাম্পিয়ার পাওয়ার আউটপুট অফার করে। অন্যদিকে ওয়াল সকেট চার্জিং সাধারণত আপনার ডিভাইসের উপর নির্ভর করে ১ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত পাওয়ার আউটপুট দিতে পারে। কম অ্যাম্পেরেজে চার্জিং খারাপ না বরং এটি আপনার ডিভাইসের ক্ষতি করবে না। কিন্তু আপনাকে এটি বেশ দীর্ঘসময় ধরে অপেক্ষা করাবে। তাই, অতিরিক্ত একটু চার্জের জন্য শুধুমাত্র আপনার গাড়ি বা ল্যাপটপ ব্যবহার করুন, সম্পূর্ণ ব্যাটারি চার্জের জন্য নয়।
ভালো মানের ক্যাবল ব্যবহার করুন
ক্যাবলের মান চার্জিং এর গতিতে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। চার্জিং ক্যাবলের ভিতরে চারটি পৃথক তার আছে—লাল, সবুজ, সাদা এবং কালো। সাদা এবং সবুজ তার ডেটা স্থানান্তরের জন্য, লাল এবং কালো বিদ্যুৎ পরিবহন করে। একটি স্ট্যান্ডার্ড ২৮-গেজ তার প্রায় ০ দশমিক ৫ অ্যাম্পস বহন করতে পারে; অন্যদিকে একটি বড় ২৪-গেজ তার ২ অ্যাম্পস বহন করতে পারে।
সাধারণত, সস্তা তারগুলি ২৮-গেজ সেটআপ ব্যবহার করে, যার ফলে চার্জিং গতি কম হয়। আপনি যদি চার্জিং দক্ষতার জন্য আপনার তারের পরীক্ষা করতে চান, তাহলে 'অ্যাম্পিয়ার' অ্যাপটি ডাউনলোড করুন। এটি আপনাকে আপনার ডিভাইসের চার্জ এবং ডিসচার্জের হার পরিমাপ করে দেখাবে।
তথ্যসূত্র: মেক ইউজ অফ, গেজেটস নাও, টেকক্রাঞ্চ।