•• ••

কোড (Code)

Posted on Oct 24, 2022 by Soaib Ahmed
সংখ্যা পদ্ধতি
কোড (Code)

কম্পিউটার সিস্টেমে ব্যবহৃত প্রতিটি বর্ণ, সংখ্যা বা বিশেষ চিহ্নকে পৃথক পৃথকভাবে সিপিইউকে (CPU) বোঝানোর জন্য বাইনারি বিট অর্থাৎ ০ বা ১ এ রুপান্তর করে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে অদ্বিতীয় সংকেত তৈরি করা হয়। এই অদ্বিতীয় সংকেতকে কোড বলা হয়। ডেটা ইনপুটের জন্য কোডিংয়ের দরকার হয়। প্রসেসিং শেষে আবার আউটপুটে ডিকোডিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ পদ্ধতিতে কোডকে আবার বর্ণ, সংখ্যা বা চিহ্নে রুপান্তর করা হয়। ব্যবহারের ভিত্তিতে কোডকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা হয়। নিচে কতকগুলো বহুল ব্যবহৃত কোডের নাম দেয়া হলো :

বিসিডি কোড : BCD কোডের পূর্ণরূপ হলো Binary Coded Decimal দশমিক পদ্ধতির সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় প্রকাশের জন্য বিসিডি কোড ব্যবহৃত হয়। ০ থেকে ৯ এই দশটি অঙ্কের প্রতিটিকে নির্দেশের জন্য ৪ বিট বাইনারি অঙ্কের প্রয়োজন। ৪টি বিট দ্বারা ৪অর্থাৎ ১৬টি ভিন্ন অবস্থা নির্দেশ করা যায়। তাই ১৬টি অবস্থা ব্যবহার করে কয়েক প্রকার বিসিডি কোড তৈরি করা সম্ভব। বিভিন্ন প্রকার বিসিডি কোড হচ্ছে- বিসিডি ৮৪২১ কোড, বিসিডি ৭৪২১ কোড, বিসিভি ৫৪২১ কোড ইত্যাদি। বিসিডি কোন সংখ্যা পদ্ধতি নয়। দশমিক সংখ্যাকে বিসিডি কোডে প্রকাশ করা চেয়ে বাইনারি সংখ্যায় প্রকাশ করা তুলনামূলকভাবে কঠিন।

আলফানিউমেরিক কোড : কম্পিউটারে ব্যবহৃত বর্ণ, অংক এবং বিভিন্ন গাণিতিক চিহ্নসহ (+, -, ×, + ইত্যাদি) আরও কতগুলো বিশেষ চিহ্নের (!, @ #, S, %, * ,^ & ইত্যাদি) জন্য ব্যবহৃত কোডকে আলফানিউমেরিক কোড বলা হয়। কম্পিউটার ছাড়াও বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্যের কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে অক্ষর ও অন্যান্য চিহ্নের প্রয়োজন হওয়ার কারণেই আলফানিউমেরিক কোডের উদ্ভব হয়েছে। কতগুলো জনপ্রিয় আলফানিউমেরিক কোড হলো-

অ্যাসকি কোড ঃ ASCII Code এর পুরো নাম হল American Standard Code for Information Interchange। অ্যাসকি একটি বহুল প্রচলিত ৭ বিটের কোড। এই কোড দ্বারা ৭ বা ১২৮টি বিভিন্ন অংক, অক্ষরসহ বিভিন্ন চিহ্ন ও আরও কতকগুলো বিশেষ চিহ্নকে প্রকাশ বা নির্দিষ্ট করা যায়।

অ্যাসকি কোডের বাম দিকে তিনটি জোন বিট এবং ডানদিকের চারটি সংখ্যাসূচক বিট হিসেবে ধরা হয়। তবে একেবারে বামে একটি প্যারিটি বিট যোগ করে অ্যাসকিকে (ASCII-8) ৮ বিট কোডে রূপান্তরিত করা হয়। বর্তমানে অ্যাসকি কোড বলতে ASCII-8 কেই বুঝায়।

মাইক্রোকম্পিউটারে এই কোডের ব্যাপক প্রচলন আছে। এছাড়াও কম্পিউটার এবং ইনপুট/আউটপুট এর জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র যেমন-কীবোর্ড, মনিটর, প্রিন্টার ইত্যাদির মধ্যে আলফানিউমেরিক তথ্য আদান প্রদানে ব্যবহৃত হয়।

ইবিসিডিক কোড ঃ EBCDIC কোডের পূর্ণরূপ হচ্ছে Extended Binary Coded Decimal Information Code। এটি একটি ৮বিটের কোড। ইহাকে এক্সটেনডেন্ট বিসিডি কোডও বলা হয়। এই কোড দ্বারা ২” অর্থাৎ ২৫৬টি অংক, অক্ষর এবং বিশেষ চিহ্ন প্রকাশ করা যায়। এই কোড প্রাথমিকভাবে আইবিএম (IBM) ৩৬০ এবং ৩৭০ সিরিজের কম্পিউটারে ব্যবহৃত হত। এ কোডে ০ থেকে ৯ সংখ্যার জন্য ১১১১, A থেকে Z বর্ণের জন্য ১১০০, ১১০১ ও ১১১০ এবং বিশেষ চিহ্নের জন্য ০১০০, ০১০১, ০১১০ ও ১১১ জোন বিট ব্যবহার করা হয়। দশমিক সংখ্যাগুলোকে ৮৪২১ কোডের মাধ্যমে প্রকাশ করে প্রত্যেক সংখ্যার সাথে ১১১১ জোন বিট যোগ করে ইবিসিডিক কোড প্রকাশ করা হয়। মনে করি, ৫ কে ইবিসিডিক কোডে প্রকাশ করতে হবে। তাহলে, ৫ এর বিসিডি ৮৪২১ পরে কোডে মান হবে ০১০১। সুতরাং, ৫ এর ইবিসিডিক কোডে মান হবে ১১১১০১০১।

ইউনিকোড : Unicode এর পুরো নাম হল Universal Code বিশ্বের সকল ভাষাকে কম্পিউটারে কোডভুক্ত করার জন্য বড় বড় কোম্পানিগুলো একটি মান তৈরি করেছেন যাকে ইউনিকোড বলা হয়। ইউনিকোড হচ্ছে ১৬ বিট কোড। বিভিন্ন ধরনের ক্যারেক্টার ও টেক্সটকে প্রকাশ করার জন্য ইউনিকোড ব্যবহৃত হয়। ইউনিকোডের মাধ্যমে ১৬ - ৬৫৫৩৬ টি অদ্বিতীয় চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়। ফলে সে সমস্ত দেশের (যেমন, চাইনিজ, জাপানিজ, কোরিয়ান) ভাষাকে প্রকাশ করতে ৮ বিটেরও বেশি কোচ ব্যবহৃত হয়। সেই সব ক্ষেত্রে ইউনিকোড ব্যবহৃত হয়। Windows 2000, OS/2 ইত্যাদি অপারেটিং সিস্টেম Unicode সাপোর্ট করে Unicode তালিকায় হেক্সা 0980 থেকে হেক্সা 09FF কোডে বাংলা বর্ণ এবং প্রতীকসমূহ স্থান পেয়েছে।