•• ••

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence – AI)

Posted on Sep 17, 2022 by Ikbal Ahmed
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

কম্পিউটারের নিজস্ব কোনো বুদ্ধি নেই। এটি শুধু নিজের কাছে সংরক্ষিত তথ্য এবং প্রোগ্রামের আলোকে কাজ করতে পারে। কোনো সমস্যার আলোকে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে না। কম্পিউটার যাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তার জন্য এর ভেতর অনেক সমস্যার সমাধান ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটিকেই বলে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সি বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা সংক্ষেপে AI (এ আই) বর্তমানে কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। এ শাখায় কম্পিউটারকে মানুষের মতো চিন্তাভাবনা করে অসম্পূর্ন তথ্য ব্যবহার করে পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে, সমস্যার সমাধান করবে, পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে- সে বিষয়গুলো নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। এ কারণেই কম্পিউটারকে প্রোগ্রামভিত্তিক যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করা হয়। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আমাদের প্রথমেই বুঝতে হবে বুদ্ধি জিনিসটা আসলে কি? বুদ্ধি হচ্ছে জ্ঞান আহরণ করা এবং তা প্রয়োগ করার ক্ষমতা । সাধারণ প্রোগ্রামগুলো জ্ঞান আহরণ করতে পারে না। কিন্তু যে সব মেশিন বা প্রোগ্রাম এমনভাবে তৈরি করা হয়,যেন তারা নিজে নিজে কিছু শিখতে পারে,সেগুলোকে আমরা বলি বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম বা বুদ্ধিমান মেশিন। যেমন গুগল সার্চ প্রোগ্রামটা একটা বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম। আমরা কিছু সার্চ করলে এটি আমাদের আগের সার্চ হিস্টরি, বয়স, লোকেশন ইত্যাদির উপর নির্ভর করে আমাদের সার্চ রেজাল্ট প্রদর্শন করে। 

অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মানুষের চিন্তাভাবনাগুলোকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার বা কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রের মধ্যে রূপ দেয়ার ব্যবস্থা। ১৯৫৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের MIT এর John McCarthy সর্বপ্রথম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শব্দটি উলে­খ করেন। ক্রমেই এটি বিস্তৃতি লাভ করছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। কম্পিউটারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে একই সময়ে বিভিন্ন কাজ দ্রæত করতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে যন্ত্র যৌক্তিক চিন্তা, জ্ঞান, পরিকল্পনা, শিক্ষণ, যোগাযোগ, উপলব্ধি এবং যন্ত্র চলাচল করার সামর্থ্য পায়। প্রোগ্রামিং ভাষা LISP, CLISP, PROLOG, Python, Java, R, MATLAB, SHRDLU, C/C++ ইত্যাদি ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করা হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাস্তব প্রয়োগ হলে রোবট। 

                চিত্রঃ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং তার উদাহরণ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার  জ্ঞানের ক্ষেত্রসমূহ:-

এক্সপার্ট সিস্টেম (Expert System)ঃ এক্সপার্ট সিস্টেম হলো এক ধরনের সফটওয়্যার যা সুসংগঠিত তথ্য ব্যবহার করে কম্পিউটারকে কোনো বিষয়ে দক্ষ বা বিশেষজ্ঞ করে তোলে। এক্সপার্ট সিস্টেম হলো এক ধরনের সিদ্ধান্ত সমর্থন পদ্ধতি যা নির্দিষ্ট বিষয়ে মানুষের ন্যায় কৃত্রিম  দক্ষতা নিয়ে তৈরি। উচ্চ দক্ষতাস¤পন্ন অনেকগুলো মাইক্রোপ্রসেসর ও চিপ ব্যবহার করে প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে কম্পিউটারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৃষ্টি করা হয়। ব্যবহারকারীরা এ সিস্টেম থেকে প্রশ্ন করে উত্তর জানতে পারে। 

বর্তমানে ব্যবহৃত বিভিন্ন এক্সপার্ট সিস্টেমসমূহ এবং তাদের কাজঃ  

  • Deep blue: দাবা খেলার বিচারক হিসেবে কাজ করা।
  • Internist: চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান এবং নির্ভুলভাবে জটিল রোগের সার্জারি করা।
  • Mycin and Cadulus: চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করা।
  • Mycsyma: গাণিতিক সমস্যা সমাধান করা।
  • Dendral: প্রোগ্রামিং শেখানো।
  • Prospector: খনিজ পদার্থ ও আকরিক অনুসন্ধান করা। 

এক্সপার্ট সিস্টেমের ব্যবহারঃ 

  • রোগীর রোগ নিরাময়ে।
  • বিভিন্ন ডিজাইনের ত্র“টি সংশোধনে।
  • জেট বিমান চালনায়, পরিকল্পনায় ও শিডিউল তৈরিতে ।
  • ভ‚গর্ভস্থ তেল অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে।
  • শিক্ষামূলক ও টিউটোরিয়াল সফটওয়্যারে।